হয়ে উঠতো তখন জলের কলের নিচে মাথা দিয়ে বসে থাকতাম। মাথা ব্যথাটা একটু থিতিয়ে এলে আবারও পড়াশোনায় ডুব দিতাম৷
কেবলমাত্র মনের জোরে চারটা দিন টানা পড়াশোনা করলাম আমি। পড়তে পড়তে যখন মাথাব্যথাটা অসহ্য
হয়ে উঠতো তখন জলের কলের নিচে মাথা দিয়ে বসে থাকতাম। মাথা ব্যথাটা একটু থিতিয়ে এলে আবারও পড়াশোনায় ডুব দিতাম৷
এভাবে চারটা দিন কাটলেও পঞ্চম দিনটা আর কাটলো না। সেদিন দুপুর। মাইগ্রেনের
সেই গমগমে কন্ঠস্বর। আমি চমকে পানির কলটা বন্ধ করে কান খাড়া করলাম। প্রথমে মনের ভুল ভাবলেও পরমুহূর্তেই ভুল কেটে গেল। ভুল নয়, শুভ্র ভাই সত্য সত্যই এসেছেন। আম্মুর সাথে কথা বলছেন। আমি তাড়াহুড়ো করে ঘরে এসে মাথা মুছলাম। দরজার কাছে এসে দাঁড়াতেই আম্মুর সজল কন্ঠস্বর কানে এলো। আমি
কিছু বুঝতে না পেরে আনমনেই চমকে উঠলাম। কেঁপে
উঠল শরীর। থেমে গেল হৃদপিণ্ড। শুভ্র ভাই কী আমাদের ডিভোর্স বিষয়ক আলোচনা করতে এসেছেন? নয়তো
হঠাৎ এলেন কেন? আম্মুই বা কাঁদছে কেন? একটু পরই দৃশ্যপটে ছোট ফুপ্পির আগমন হলো। তার স্থূল শরীরটা সোফায় মেলে দিয়ে খুব মন
করা কন্ঠে বললেন,
মন কলিজার টুকরো ছেলেগুলো বিদেশ ভুঁইয়ায় চলে গেলে কী মন টিকে? সাবধানে থেকো বাবা। তোমাকে নিয়ে তোমার বাবা-মার কত গর্ব। হুট করে কোনো বিধর্মী জাপানিজ মেয়েকে বিয়ে টিয়ে করে বসো না। জাপানিজ মেয়েগুলো ফাজিল আছে। ভালো ভালো ছেলেদের বশ করে ফেলে।'
শুভ্র ভাই হেসে ফেললেন। তার সুদর্শন মুখটিতে মৃদু বিমর্ষতা খেলে গেল যেন। বললেন,
দেশে যে বশীকরণ রেখে যাচ্ছি। সে বশীকরণ কাটানোর মতো বশীকরণ শক্তি তাদের নেই। আপনি চিন্তা করবেন না আন্টি। আপনাদের দেশী ছেলে সবসময়ই দেশীই থাকবে।'
ছোট ফুপ্পি যেন খুব সন্তুষ্ট হলেন।আদিবা-জারিফকে ডেকে শুভ্র ভাইয়ের মতো হতে হবে এমন কিছু বক্তব্য
ঝাড়লেন। মিথি আপুর বাবু হওয়া উপলক্ষে তখনও বাসায় মেহমান। ঘনিষ্ঠ আত্মীয় স্বজনের ভিড়ে হৈ হৈ করছে বসার ঘর।
শুভ্র ভাই একে একে সবার থেকে বিদায় নিলেন। তখন গিয়ে আমার মনে পড়ল আজ
চব্বিশ তারিখ। শুভ্র ভাইয়ের বিদায় বার। ঠিক তখনও শুভ্র ভাই এই দেশে থাকবে না তা নিয়ে খুব একটা ভাবনা হলো না আমার।
কোনো অনুভূতি হলো না। একটা মানুষ দেশে না থাকা
ধন্যবাদ পরার জন্য